Saturday, February 6, 2010

“রাতের অ্যাম্বুলেন্স” একটি ভৌতিক গল্প



“রাতের অ্যাম্বুলেন্স” একটি ভৌতিক গল্প

আজ কাজে আসতে কামালের একটু দেরী হয়ে যায় . এখন বাজে সকাল প্রায় ৯ টা ৪৫ মিনিট .
হাজিরা খাতায় সই করতে করতে কামাল একবার আশে পাশে চোখ বুলায় তারপর ঝট করে হাজিরের
ঘরে লিখে ফেলে ৯টা ৩০ মিনটি . তার পর পাশের টেবিলে বসা এক বুড়োকে লক্ষ্য করে বলে-
বুঝলেন কলিম চাচা বউডার শরীর বেশি ভালা না . আট মাস চলতাছে . অনেক চিন্তায় আছি.
বাসায় কেউ নাই যে দেখভাল করবো . কি যে করি ? একটু থেমে আবার বলে -আমারই সব
করতে হয় . তার উপর টাকা পয়সার সম্যায় আছি .
-একটা কামের লোক রাখতে পারো না মিঞা ? পাশের টেবিলে বসে থাকা ৬০ বছর বয়সের বৃদ্ব
কলিম মিয়া কথাটা বলে কিছুটা থামে , তারপর আবার বলে - জানো তো পরপর তিনদিন লেট
হইলে এক দিনের বেতন পানিতে যাইবো . তোমার এ মাসে ওলরেডি ৭ দিন লেট . মানে ২
দিনের বেতন নাই. ব্যাপারটা মাথায় রাইখো .

কামাল কিছু বলে না মাথা নাড়ায় . সে ব্যাপারটা জানে .
সরওয়াদি হাসপাতালের এ্যম্বুলেন্স ড্রইবার হিসাবে গত মাস দু’য়েক আগে যোগ দিয়েছে কামাল . ওর কাজ হলো সারাদিন এ্যম্বুলেস চালান . যেদিন কাজের চাপ থাকে সেদিন এতো বেশি থাকে যে খাওয়া দাওয়ার সময় থাকে না . আর যেদিন কাজের চাপ কম থাকে সেদিন দেখা দু’একটা ট্রিপ মারার পরই বসে বসে ঝিমোতে হয় . তবে কাজের মধ্যেই থাকতে বেশি ভাল লাগে কামালের . তার উপর কখন ও সখন ও দু’পয়সা উপরি পাওয়া যায় . শুরুতে রুগি ,লাশ পরিবহন করতে একটু খারাপই লাগত . কিন্তু এখন তা সয়ে গেছে . ও চিন্তা করে দেখেছে যাত্রী পরিবহন করার চেয়ে রুগি আর লাশ পরিবহন করাই নিরাপদ হাউকাউ চেচামেচি কম করে . সই করে এ্যম্বুলেন্সের চাবির জন্য দোতালায় উঠতেই শান্তি দিদির সঙ্গে দেখা হয়ে যায় . তিনি প্রায় দৈড়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের
দিকে যাচ্ছিলেন . শান্তি দিদি হাসপাতালের সিনিয়র নার্স . কামালকে বেশ স্নেহ্ করে . ঠিক কামালের মতো দেখতে নাকি তার এক ভাই ছিল .
- কি দিদি কি খবর ?
- ২১ নম্বর রুগির অবস্হা বেশি ভাল না রে . স্যারদের খবর দিতে গেছিলাম . তোর বউ কেমন আছে ? কোন চিন্তা করবি না আমরা আছি . শান্তি দিদি দাঁড়ায় না .
কামাল কিছু বলার সুযোগ না পেয়ে হেসে অফিস রুমে ঢুকে যায় . সেখান থেকে চাবি নিয়ে সোজা বাহার ভাইয়ের চায়ের দোকানে . চাবি নেয়ার মানে কামাল গাড়ি সহ রেডি . কল আসলেই চলে যাবে . বাহার ভাই এর দোকানে কামাল এলাহি ভাইকে দেখতে পায় . আরো কয়েকজনকে নিয়ে বসে চা খাচ্ছে আর হাত নেড়ে নেড়ে কি যেন বলছে . এলাহি ভাই এই হাসপাতালের ড্রাইভার ইউনিয়নের নেতা . তার হুকুম ছাড়া হাসপাতালের একটা গাড়িও চলে না . তার কথাই আইন . কামাল কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে বলে ভাই কেমন আছেন ?
সালামের সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়ে এলাহি মিয়া বলে - কি ব্যাপার কামাল আজকাল থাকো কৈই ? ইউনিয়িন অফিসে আসো টাস না . শুধু কি রুগিগো সেবা করলে চলবো ? নিজের ভবিষ্যতের দিকে ও তো তাকাইতে হইবো, না কি ? সর্মথনের আশায় এলাহি মিয়া পাশে বসে থাকা অন্য সবার দিকে তাকায় . সবাই মাথা নেড়ে তাকে সর্মথন দেয় .
- লিডার কামাল মিয়ার তো বাচ্চা হইবো . পাশে বসে লম্বা মতো তেল চোরা জহির বলে .
-আবে কামালের বাচ্চা হইবো নাকি ? ক’ওর বউ এর বাচ্চা হইবো . আরেকজন কথাটা বলার সাথে সাথে সবাই হো হো করে হেসে উঠে . কামাল কিচ্ছু বলে না . মুখে হাসি হাসি একটা ভাব করে রাখে . যেন খুব মজা পাচ্ছে .
-বস . চাটা খাও . তয় ভাই বাচ্চা হওনের পর কিন্তু ইউনিয়নের জন্য সময় দিবা . আমি তো শালায় তোমগো লাইগা খাটতে খাটতে শেষ . আর যে কোন দরকারে আমার ফোন দিবা . তোমগো লাইগা আমার জান কোরবান . বলে এরাহি মিয়া দল বল নিয়া চলে যায় .
কামাল বুঝতে পারে আজকের দিনটা ওর বসে বসেই কাটবে . চায়ের দোকানে দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর ও কোন কল আসেনা . কামাল উঠে ওর এ্যম্বলেন্সের কাছে চলে আসে . ১৭ নম্বর এ্যম্বুলেন্স . দরাজা খুলে ও এ্যম্বুলেন্সে উঠে রেডিও চালিয় কতোক্ষন খবর শুনে .
এমন সময় সোলেমান এসে একটা ঠিকানা দিয়ে যায় . গুলশান যেতে হবে . রুগী নিয়ে আসতে হবে . কামাল বেড় হয়ে যায় . যাবার সময় একটা কলা আর বন রুটি নিয়ে নেয় বাহার এর দোকান থেকে দুপুরের খাবার হিসাবে খাবে বলে . খাতায় লিখে রাখতে বলে ও টান দিয়ে গাড়ী নিয়ে বেড় হয়ে যায় . হাসপাতালের গাড়ি চালালে আরেকটা সুবিধা হলো রাস্তায় সাজেন্টের সঙ্গে ঝামেলায় পরতে হয় না . কথায় আছে এ্যম্বুলেন্সের সাইরেন শুনলে প্রধান মন্ত্রীর গাড়ীও নাকি সাইট দেয় . কথাটা অনেকটা সত্য .
দেশের অবস্থা খুব একটা ভাল না . হাসিনা-খালেদা দুজনই বন্ধি . কখন কি হয় বলা যায় না . তারাতারি গুলশান থেকে ফিরতে পারলেই দ্বায়িত্ব শেষ করে বাসায় ফেরা যায় . মায়া বাসায় একলা . দুবার এর মধ্যে ওর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে . মায়া বলেছে ও ভাল আছে . কোন সমস্যা নাই . তাই ও এখন অনেকটা নিশ্চিন্তে আছে . গুলশান থেকে ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায় . দোতালায় চাবি জমা দেবার জন্য আসতেই কামাল খবর পায় শান্তি দিদি ওকে কয়েকবার খুঁজেছে . অফিস রুমে খবর দিয়ে রেখেছে যেন ও আসলেই যেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চলে আসে .
(২)
৭ নম্বর ওয়ার্ডটা খুব বড় . ঢুকতেই হাতের ডান পাশে নাসদের বসার জায়গা . শান্তি দিদি সেখানেই বসে আছেন . ওকে দেখে বলেন- কামাল এদিকে আয় . তোর সঙ্গে কথা আছে .
-দিদি বাসায় যেতে হবে . তারাতারি কও কি কইবা . কামাল একটা খালি চেয়ার টেনে বসে পরে .
-তোর বউ কেমন আছে ?
-আছে কোনরকম . দিদি রাইত হইছে . কাজের কথা কও . বউডা একলা ঘরে . কামাল তারা দেয় .
-আরে বছ না ছেমরা . কাজ ছাড়া কি তোরে ডাকছি ? কামাল মাথা নাড়ে দিদি ঠিক বলেছ কাজ ছাড়া ডাকেনি . শুন ২১ নম্বর বেডের রুগীডা মারা গেছে . লাশ মর্গে আছে . তোরে একটু দিয়া আইতে হইবো .
-কি কও ? এ্যই রাইতের বেলা ? জাকিরার তো নাইট ,ও’রে কও ? কামাল চলে যাবার জন্য দাঁড়িয়ে যায় .
-আরে শুন ; শুন; তোর তো টাকা দরকার . মালদার পাটি ; পাথের খরচ বাদ দিয়াও মনে হয় হাজার পাঁচেক দিবো . জাকির গেছে সাভারে আসলে কমু . ও মনে হয় রাজি হইয়া যাইবো . সামনে তোর পোলা পাইন হইবো হাতে টাকা পয়সা দরকার তাই আমি তোরে কইলাম . এখন যাওয়া না যাওয়া তোর মর্জি .
পাঁচ হাজার ! কামাল একটু দ্বিধায় পরে যায় . আসলেই তো ওর হাতে তেমন টাকা পয়সা নাই . প্রতি মাসে মাটির ব্যাংটাতে এতোদিন যা জমিয়েছে সব মিলিয়ে হয়তো হাজার পাঁচেকই হবে . এ সময় পাঁচ হাজার টাকা হলে বাচ্চা হওনের সময় অনেক নিশ্চিত হওয়া যায় .
-কিন্তু দিদি মায়া তো বাসায় একলা . দেরী করলে ভয় পাইতে পারে .
-আরে ছেমরা কয় কি ? ভয় পাইবো কেন ? লাগলে আমি যাওনের সময় একবার দেইখা যামু . শান্তি দিদি খাতায় কিছু লিখতে লিখতে বলে .
- কৈই যাইতে হইবো ? মাথা চুলকাতে চুলকাতে কামল জিজ্ঞাসা করে .
-কুমিল্লা . শান্তি দিদি লেখা বন্ধ না করেই বলে .
-ও মা কও কি দিদি ? কুমিল্লা ! কামাল আতকে উঠে . তাইলে তো ফিরতে ফিরতে ভোর হইয়া যাইবো .
-আরে না . ভোর হইবো না . এ্যই ধর তিনটা চারইটা বাজতে পারে .
-হেইডা তো ভোরই . কাইল আবার ডিইটি আছে না ? কখন ঘুমামু কখন কামে আমু .
-কাইল ১২ দিকে আবি .সুপার স্যাররে আমি কইয়া রাখুম . কোন অসুবিধা হইবো না . শান্তি দিদি ফাইলটা আলমিরাতে রাখতে রাখতে বলে .
-একটা কথা কও তো দিদি তোমার এতো গর্জকে ? ভালাই পাইছো মনে হয় .
-আরে ছেমরা মর . আমার আবার গর্জ কি ? তুই যখন মরবি তখন তোর লাইগাও আমি মাইষের হাতে পায়ে ধরমু .
-আহা দিদি রাগ করো কেন ?
-শুন . দিদি কামালের কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে . যে মরছে সে অনেক বড় লোক আছিল . বড়লোকগো যেমন খাসলত ভালা হয় না . এই ব্যাডারও তাই আছিল . শেষ বয়সে তিনডা বিয়া করছে . কচি কচি মাইয়া গুলি এই এক সপ্তাহ বুইড়াডার লাগি যা করলো . এখন মরার পরও লাশ নিয়া বইয়া আছে . তুই যাইয়া পৌছে দিয়ে আয় . তোর কাম শেষ . শান্তি দিদি ওর হাতে একটা সাদা খাম দেয় .
-কি এইডা ? কামাল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে .
-কি আবার টাকা আর ঠিকানা যেহানে যাবি . যা গাড়িতে গিয়া ব.
-কিন্তু দিদি এতোটা পথ এই রাইতের বেলায় লাশ নিয়া একলা যাইতে পারুম না .
-আরে ছেমড়া একলা যাবি কেন . বুইড়ার তিন বউ যাইবো তোর লগে . দেখিস আবার না তুই বুইড়া হইয়া যাছ .নিজের রসিকতায় নিজেই শান্তি দিদি হেসে উঠে .
-কি যে কওনা দিদি ? আমি তাইলে গাড়িতে যাই .
-যা . আর শুন বউরে নিয়া চিন্তা করবি না . আমি তোর দিদি আছি . যা ভাগ .
কামাল বেড় হয়ে যায় . হঠাৎ করে টাকাটা পেয়ে মেজাজ ভাল হয়ে যায় . যেতে যেতে মায়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলে . মায়াকে জানায় - ওকে এখন কুমিল্লা যেতে হচ্ছে , ফিরতে রাত হবে . মায়া যেন কোন চিন্তা না করে . যতো তারাতারি সম্ভব ও ফিরে আসবে .
কামাল নীচে নেমে দেখে লাশ ওর গাড়িতে তোলা হয়ে গেছে . মনির মিয়া গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছে .
এতো ভারী কারো শরীর হয় ? চাইর জন মিল্লাও তুলতে যে কষ্ঠটা হইলো . কামালের দিকে তাকিয়ে হাত ঢোলতে ঢোলতে কথা গুলো এক নি:শ্বাসে বলে মনির মিঞা .
-অনেক ভারী নাকি ? পাল্টা জিজ্ঞাসা করে কামাল তাকায় এ্যম্বুলেন্সের ভেতরে . বাম পাশের বেডের উপর লাশটা রেখে সাদা একটা চাদর দিয়ে লাশটা ডেকে দেওয়া হয়েছে . মিনির মিঞা বাম দিকের দরজা বন্ধ করে দেয় . কালো বোরকা পরা লম্বা মতোন দু’জন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির পাশে . একবার কামালের দিকে তাকিয়ে দু’জন নীচু স্বরে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকে . কামালের কান পর্যন্ত সে কথার আওয়াজ পৌছায় না . কাগজ নিয়ে আরেক জন বোরকা পড়া মহিলা কামাল এর কাছে এসে বলে - আপনিই কি যাবেন ভাই ?
-কামাল উপরে নীচে হা সূর্চক মাথা নাড়ে .
-তা হলে চুলুন রওনা হই . মহিলা মিনির মিয়ার হাতে কয়েকটা একশ টাকার নোট দিয়ে অন্য দুজন মহিলার দিকে তাকিয়ে বলে - কৈই তোমরা আস .
সবাই উঠে বসতেই কামাল এ্যম্বুলেন্স ছেড়ে দেয় . ঘড়িতে তখন বাজে কাটায় কাটায় রাত ১২ টা বাজে .
(৩)
রাস্তায় খুব একটা গাড়ি নেই . সোডিয়াম বাতির আলোয় পথ ঘাট কেমন ভৌতিক মনে হচ্ছে . কামাল এমনিতে ভুত প্রেত বিশ্বাস করে না . তবু এ নির্জন রাতে কেন যেন ওর শরীরে কাটা দিয়ে যায় . গাড়ির গতি ঘন্টায় ৬০ রাখে কামাল . মনে মনে ঠিক করে কোন অবস্থাতেই গাড়ির গতি ৬০কি.মি: এর উপড় নেবে না . কামালের শশুরই ছিল ওর ওস্তাদ . সে শিখিয়েছে রাতের বেলা রাস্তা ঘাট যতোই ফাঁকা হোক না কেন একটা নিদিষ্ট গতিতে গাড়ী চালালে কোন এক্সিডেন্ট হয় না . কামাল কথাটা বিশ্বাস করে . তাই আগে বাগে মনে মনে গাড়ির গতি ঠিক করে নেয় ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার .সংসদ ভবন এর সামনে আসতেই বৃষ্টি শুরু হলো . কামাল মনে মনে বলে- বৃষ্টি হবার আর সময় পেল না . কামাল গাড়ীর গতি আরো কমিয়ে আনে . আসাদ গেটে আড়ং এর সামনে আসতেই সিগনাল পরে গেল . কামাল একবার ভাবলো টান দিয়ে চলে যাবে কিনা ? কিন্তু পরক্ষনেই ভাবলো; না . অস্থির হবার কিছু নাই .
ও গাড়ী থামিয়ে গ্রীন বাতির জন্য অপেক্ষা করে . রাস্তা প্রায় ফাঁকা . কোন জন মানব নেই . ডানে বামে তাকালে ওর কেমন একটা গা ছমছম করে উঠে . দুর ! যতোসব ফালতু চিন্তা ভাবনা . এক কিলোও আসতে পারলাম না আর ভুতের চিন্তা পেয়ে বসেছে . নিজেক নিজেই সান্তনা দেয় কামাল . হঠা. বাম পাশের জানলা দিয়ে একটা মুখ উকি দিতে চমকে উঠে চিৎকার করে কামাল কে ? কে ?
জানালায় দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে আছে এক বুড়া . মাথায় এলোমেলে সাদা চুল . দু’হাত দিয়ে জানালার কাঁচ চেপে আছে . দাঁত গুলোও কেমন ফাঁক ফাঁক . লোকটা বলে উঠে- দে ; দে; টাকা দে . ভাত খামু টাকা দে .
মেজাজ খারাপ হয়ে যায় কামালের . মনে হয় নাইমা দুইটা চড় মারে . হারমজাদা ভিক্ষা চাওনের আর কোন সময় পায় না . মর যাইয়া . ও সাট ফাঁক করে বুকে থুতু দেয় .
মনে মনে গজগজ করলেও বুক পকেট হাতরে পাঁচ টাকার একটা নোট বেড় করে লোকটার দিকে বাড়িয়ে ধরে . লোকটা টাকা না নিয়ে বলে -ভাগ . ভাগ . তারাতারি ভাগ .
কথার আগা মাথা বুঝতে পারে না ও . কামালের কাছে লোকটাকে করে হয়তো পাগল- টাগল হইবো . ঠিক এই সময় ওর পেছনের ছোট জানলায় টোকা দেবার শব্দ হয় . কামাল ওর ঠিক পিঠ লাগোয়া যে জানালাটা সেটা একটু ফাঁক করে ও ০পেছনে না তাকিয়েই বলে- জ্বি বলেন ?
-কি হয়েছে ? পেছন থেকে তিন জনের একজন জিজ্ঞাসা করে .
-না কিছুনা .
সিগনাল ছেড়ে দেওয়ায় কামাল গাড়ী টানদেয় . কামাল বাম পাশের মিররে তাকিয়ে বুড়োটাকে আর দেখতে পায় না . মনে মনে ভাবে আরে গেলো কোথায় ? ও একটু সামনে ঝুকে ফুটপাতটা দেখতে চেষ্টা করে ;কিন্তু বুড়োকে আর দেখতে না পেয়ে বেশ অবাক হয় ও ; তারপর ফামগেটের দিকে টার্ন্ নেয় .
পেছন থেকে ফিস ফিস করে কথা বলার শব্দ কানে আসে কামালের . এই নিরবতায় তাতে ও কিছুটা সাহস পায় কামাল . মাঝে মাঝে দু’একটা গাড়ি শো শো করে পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে . রাতে রাস্তায় বেশির ভাগ ট্রাকই চলে . দানবের মতো ট্রাকগুলি ঘোত ঘোত শব্দ করে চলে যায় . সায়দাবাদ ; যাত্রাবাড়ি হয়ে কামাল গাড়ি চালাতে থাকে শনির আকড়া দিয়ে কুমিল্লার দিকে . এ রাস্তাটা ওর বেশ পরিচিত . একটানা বৃষ্টি হচ্ছে . মনে হয়ে আজ সারা রাতই হবে . মাঝে মাঝে বিকট , শব্দে বিদ্যুত চমকাচ্ছে . শীত; শীত একটা ভাব চলে এসেছে . কামাল পানির বোতল খুলে পানি খায় . আশে পাশের দোকান পাট সব বন্ধ . আজ মনে হচ্ছে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও কম . পেছন থেকে আবারও টুক টুক করে শব্দ হয় .
- জ্বি বলেন ? কামাল মাথাটা একটু পেছনে নিয়ে বলে .
-আমরা একটু নামবো ? এক জন বলে . কামাল অবাক হয় .
-এখানে ?
-জ্বি . আপনি কি একটু থামেন .
-মনে হয় দাউদকান্দি এসে পরেছি . সেখানে থামলে হতো না ?
-না . সামনের বড় গাছটার কাছে থামুন . পেছন থেকে অন্য একটি কন্ঠ বলে উঠে . কথাটা আদেশেয মতো শুনার ওর কাছে . কামাল এ্যম্বুলেন্সটা রাস্তার পাশে একটা বড় গাছের গা ঘেষে দাঁড় করিয়ে দেয় . পেছনের দরজা খোলার শব্দ পেয়ে ও জানালাটা দিয়ে পেছনে তাকায় . আধো আলোয় যা দেখতে পায় তাতে কামাল এর মাথা ঘুরে উঠে . সিটের উপর মৃত ব্যক্তি বসে আছে . শুধু বসেই নেই ; হাত নেড়ে নেড়ে কি যেনো বলছে . ও প্রচন্ড রকমের ভয় পেয়ে যায় . কামল পেছন থেকে চোখ সরিয়ে নিজেকে আড়াল করে রাখতে চেষ্টা করে . সামনে তাকালে দু’ছায়া দেখতে পায় ও . কোন শরীর নেই . শুধু বোঝা যাচ্ছে দেহের অস্তিত্ব . বাতাসে ভেসে ভেসে ছায়া দু’কামালের দিকেই আসছে . ভয়ে ওর জান বের হয়ে যাবার জোগার . মনে হচ্ছে মরে যাবে . নিজেকে সিটের সঙ্গে চেপে রাখে ও. মনে হচ্ছে নিজেকে সিটের ভেতর ডুকিয়ে ফেলতে পারলে ভয় কিছুটা কমে যেতো . মনে মনে আল্লাহ্ ; আল্লাহ্ করতে থাকে . ছায়া দু’টো ওর পাশ দিয়ে পেছনে চলে যায় . পেছন থেকে হঠাৎ হাসির শব্দ ভেসে আসে . কামাল সাহস সঞ্চয় করে আবার পেছনে তাকায় .
লাশটা গাড়ি থেকে নেমে মাটিতে দাঁড়িয়ে আছে . শরীরে জড়ানো মুদ্দারের কাপড় এলোমেলো ঝুলে আছে . লোকটার হাতে সাদা কাপরের একটা পুটলির মতো কিছু . দু’জন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে লোকটার ঠিক সামনে . একজন পুটুলিটি একটু ফাঁক করেতেই কামাল একটি শিশুর মাথা দেখতে পায় .
লোকটা পুটুলিটা গাড়ির ভেতরে ছুরে মারে . প্রায় সাথে সাথে হুরমুর করে সবাই গাড়িতে উঠে পরে গাড়িতে. কামালের শরীর শক্ত হয়ে গেছে . একবার ভাবলো গাড়ি থেকে নেমে দৌড় দেবে কিনা . কিন্তু কোথায় যাবে ? তার চেয়ে ভাল কিছু না দেখার ভান করে থাকলে হয়তো জানে বেচে যাওয়া যাবে . ও মনে মনে প্রার্থনা করে আল্লাহ্ বাঁচাও . পেছন থেকে টোকা দেবার শব্দ আসতেই কামাল চমকে উঠে - গাড়ি চালাল . ভারী এটা কন্ঠ বলে . কামাল চাবিতে হাত দিতেই গাড়ি স্টাট হয়ে যায় . কামালের মাথা কাজ করছে না . গাড়ি রাস্তায় উঠার সময় সাইড মিররে দেখতে পায় ছায়া দু’টো এখনও দাঁড়িয়ে আছে . হাতে ধরে আছে সাদা মতো দু’টো পুটুলি . এখন আর বৃষ্টি পড়ছে না ; তবে মাঝে মাঝে বিদ্যূত চমকাচ্ছে . মেইন রাস্তা ধরে গাড়ি চালাচ্ছে কামাল . ও চালাচ্ছে না বলে গাড়ি নিজে নিজে চলছে বললেই ভাল শুনায় . কেননা এই মুর্হুতে গাড়ির উপর ওর কোন কন্টোল নেই . ও শুধু চুপচাপ বসে আছে . গাড়ি নিজে নিজে চলছে . পেছন থেকে চুক চুক শব্দ ভেসে আসছে . কামাল নিজেকে সামলে সাহস সঞ্চয় করে আবার পেছনে তাকায় . দেখতে পায় দু’জন করে দুপাশে বসে সবাই সামনের দিকে ঝুকে বাচ্চাটাকে খা�

Monday, January 18, 2010

Hindu & Hinduism at a Glance

What is Hinduism?

It is important to recognize four important fundamental doctrines to fully understand Hinduism. These are derived from the philosophical Vedic texts of Upanishads.

1. The phenomenal world of matter, animals, humans and even gods is a
manifestation of a Supreme Being called Brahman, without whom nothing
would exist.

2. The human beings are capable of not only merely knowing about the existence
of Brahman; they can also realize its existence by direct intuition and
discursive reasoning.

3. The human being possesses a dual nature: one isJiva-atman or the phenomenal
ego and the other is an eternal Self (antar-atman), which is an inner spirit
designed in the same mold as Brahman. If he so desires, it is possible to
identify himself with the inner spirit and therefore with Brahman.

4. The only purpose of man's life on earth is to identify himself with the
eternal Self called Brahman and unite with it through knowledge (jnana),
service (karma) and/or devotion (bhakti).

Who is a Hindu?

Chinmayananda once said, (and I paraphrase), 'I am not interested in converting anyone into Hinduism. I am interested in converting Hindus into Hindu religion.' It rings true today as we have neglected the study of the religion of our ancestors that has survived thousands of years and has had the unique capacity to adapt and change with the times. The Hindu religion is aptly called 'Sanatana Dharma' which is synonymous with 'a religion with no beginning or ending, that will survive forever.'

The fundamental question like what is Hinduism is difficult to answer in simple words and to justly convey the essence of the religion of Hinduism. A more detailed and organized study of the evolution and history of the religion is necessary to fully understand the tenets of the religion. But it need not be complicated or esoteric for a commoner to comprehend. The philosophy, so well explained in the Upanishads can be followed by anyone once the basic concept of the religion is understood.

Who is a Hindu? In simple terms, 'He who accepts the Scriptures (such as the Vedas, Smritis, Puranas and Tantras), as the basis of his religion and of the rule of conduct (or Dharma), and he who believes in one Supreme God (Brahman), in the Law of retributive justice (or Karma), and in reincarnation (punarjanma), is a Hindu.' To really understand this simple statement one has to know what the scriptures are and what are the laws that govern the life of a Hindu.

Sunday, January 17, 2010

Five Point of Islam

Islam:

দুনিয়ায় যত রকম ধর্ম রয়েছে তার প্রত্যেকটির নামকরণ হয়েছে কোন বিশেষ ব্যক্তির নামে। অথবা যে জাতির মধ্যে তার জন্ম হয়েছে তার নামে। যেমন, ঈসায়ী ধর্মের নাম রাখা হয়েছে তার প্রচারক হযরত ঈসা (আ)- এর নামে। বৌদ্ধ ধর্ম মতের নাম রাখা হয়েছে তার প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা বুদ্ধের নামে। জরদশতি ধর্মের নামও হয়েছে তেমনি তার প্রতিষ্ঠাতা জরদশতের নামে। আবার ইয়াহুদী ধর্ম জম্ম নিয়েছিল ইয়াহুদা নামে বিশেষ গোষ্ঠীর মধ্য। দুনিয়ায় আরো যেসব ধর্ম রয়েছে, তাদেরর নামকরণ হয়েছে এমনিভাবে। অবশ্য নামের দিক দিয়ে ইসলামের রয়েছে একটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য। কোন বিশেষ ব্যক্তি অথবা জাতির সাথে তার নামের সংযোগ নেই। বরং ‘ইসলাম’ শব্দটির অর্থের মধ্যের আমরা একটি বিশেষ গুণের পরিচয় পাই, সেই গুণই প্রকাশ পাচ্ছে এ নামে। নাম থেকেই বুঝা যায় যে, ইসলাম কোন এক ব্যক্তির আবিষ্কার নয়, কোন এক জাতির মধ্যে এ ধর্ম সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম কোন বিশেষ ব্যক্তি, দেশ অথবা জাতির সম্পত্তি নয়। তার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মধ্যে ইসলামের গুণরাজি সৃষ্টি করা। প্রত্যেক যুগে প্রত্যেক কওমের যেসব খাঁটি ও সৎলোকের মধ্যে এসব গুণ পাওয়া গেছে, তারা ছিলেন ‘মুসলিম’। এ ধরনের লোক আজো রয়েছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।

--------------
Five Point of Islam:
(Understanding the Basics of Islam to Better
Critique Islam. All Muslim should follow this.)




Shahadah
The first and perhaps most important of the Five Pillars is shahadah, an expression of faith in the Oneness of God and that Muhammad received and delivered God's final revelation to humanity. Every Muslim is expected to say the shahadah at least once in his or her life, but most say it every day. Anyone who says the shahadah is assumed to be a Muslim. In English, the basic formulation of the shahadah is: "There is none worthy of worship except God and Muhammad is the messenger of God."

The shahadah is not just an expression of belief in God, but also of submission to God — only God is worthy of worship and absolute submission. Ritual recitation of the shahadah reinforces the principle that humans are obliged to completely submit themselves to the desires of a god. The more a person repeats it, the more they may believe it and act on it, which means performing further actions they are told are required of them by God. There is no evaluation of whether such actions are wrong or right, much less their consequences. Obedience is expected to be total and unquestioning. In practice, this often means unquestioning obedience to self-proclaimed representatives of this god.

Salat

The second of the Five Pillars is salat, the prayers which each Muslim must recite five time each day. They cannot be said all at the same time and so they create a sort of rhythm which structures the day:

1. Fajr: After dawn but before sunrise;
2. Duhr: early afternoon till late afternoon;
3. 'Asr: late afternoon prayer till sunset;
4. Maghrib: just after sunset;
5. Isha: late evening till late at night.

When saying their prayers, a Muslim is required to be facing in the direction of Mecca, the city where Muhammad was born, though originally prayers were oriented towards Jerusalem. This changed after Muhammad realized he wouldn't be able to convert Jews to his new religion. Prayers make use of verses from the Qur'an and are said in Arabic.

Like the shahadah, prayers are an expression of one's submission to God and God's will — not just for humanity in general, but also the praying Muslim in particular. The ritualistic and repetitive nature of prayers can help convince a person that they really are subservient and really do need to submit to a higher authority. In a sense, constant and ritualistic prayers can have the effect of causing a person to brainwash themselves. When people are able to do this to themselves, they don't need as much supervision from religious leaders.

Zakat

The third of the Five Pillars is zakat, the financial obligations which every Muslim has to the ummah, or community of believers. In Islam, everything essentially belongs to Allah, which means we humans only hold it in trust. But we must use our possessions wisely, which includes sharing with the less fortunate. In practice, what it comes down to is a contribution to the community's general welfare. Each Muslim calculates their contribution individually, but it is supposed to amount to one-fortieth of their total capital. They can give more if they want, but preferably in secret.

Because zakat is something that can be done privately — people are responsible for accurately calculating what they owe — there is no authority responsible for ensuring accuracy and to which people can be held accountable. The effectiveness of zakat thus depends entirely on convincing people that God will punish them if they fail to contribute sufficiently — which, even if true, does absolutely nothing to alleviate the suffering and privations of the poor here and now. Punishments and rewards in the afterlife are good way to prevent justice from being achieved in this life, a life we all agree exists and where justice should prevail.

Sawm

The fourth of the Five Pillars is sawm, which refers to self-purification through fasting. Traditionally every Muslim fasts from sunrise to sunset during Ramadan, the ninth month of the Muslim lunar calendar. Fasting means abstaining from all food, drink and sexual relations. Some are exempt from the fast, including people who are sick, the elderly, and those on a journey. Women who are pregnant or nursing are also exempt. In each case, it is preferred if they try and make up the days at other times when they are able. Children do not usually start fasting until they reach puberty.

Although the concept of purity may sound relatively innocuous, it is in fact the foundation of many harmful, discriminatory, and even violent behaviors. An insistence on purity has often been the reasoning behind excluding women from certain areas of life, for example, especially after pregnancy or menstruation. A desire for ritual purity can encourage the belief that "impure" beliefs of others must be suppressed, the "impure" people must be discriminated against, and that "impure" behaviors must be legally banned. Purity is a concept which helps separate the righteous from everyone else and this division lies behind nearly every form of religious violence that occurs.

Hajj

The fifth of the Five Pillars is the hajj, a pilgrimage to Mecca which each Muslim should make at least once in their life if they are physically and financially able. Many Muslims do it more than once. Pilgrims are to wear simple clothing which is supposed to eliminate national, cultural, and class differences between those attending. Islam is, after all, a religion which is supposed to create a community of believers within which there are no such divisions. The hajj, then, serves as a reminder of this despite the great distances which separate Muslims around the world.

It is laudable that Islam has practical activities to reinforce the principle of equality — Christianity has a similar principle, but nothing analogous to the hajj anymore. At the same time, though, the ideal of equality is not entirely matched by reality. People who complete a hajj are highly regarded in their communities and the prospect of increased status thus becomes an incentive for going on pilgrimage.